মুখে নিম পাতার ব্যবহার
মুখে নিম পাতার ব্যবহার করলে আমাদের কোন ধরনের উপকারে আসে সে বিষয়গুলো নিয়ে
আজকের এই পোস্টটি লেখা হয়েছে। মুখে নিম পাতা ব্যবহার করলে আমাদের মুখের জন্য
ভালো না ক্ষতি এই দিক গুলো নিয়ে আলোচনা করা হবে।
আরও পড়ুনঃকাশির জন্য তুলসী পাতা খাওয়ার নিয়ম
প্রেজ সূচিপত্রঃ
- মুখে নিম পাতার ব্যবহার
- ব্রণের জন্য নিম পাতার ব্যবহার
- চুলকানিতে নিম পাতার ব্যবহার
- নিম পাতার ক্ষতিকর দিক
- নিম পাতার রস খাওয়ার নিয়ম
- চর্মরোগে নিম পাতার ব্যবহার
- চুলে নিম পাতার ব্যবহার
- তৈলাক্ত ত্বকে নিম পাতার ব্যবহার
- দাউদে নিম পাতার ব্যবহার
- উপসংহার
মুখে নিম পাতার ব্যবহার
নিম পাতা সাধারণত একটি প্রাকৃতিক ভেষজ ওষুধ হিসেবে ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
তাছাড়া নিমপাতা ব্যবহার করার মাধ্যমে আমাদের ত্বকের ব্রণ ও কালো দাগের মতো
সমস্যার সমাধান করে থাকে। তাছাড়া ব্রণ ও আমাদের মুখের ক্ষত চিহ্ন দূর করার জন্য
নিম পাতার বেশ উপকারিতা রয়েছে। নিম পাতার পেস্ট করে মুখে লাগালে ভালো ফলাফল
পাওয়া যায়।
নিমপাতা সাধারণত আমাদের মুখে নানান ধরনের সমস্যা সমাধান করে না। আরো অনেক সমস্যা
আছে যেগুলো শুধুমাত্র নিমপাতা ব্যবহারের মাধ্যমে সমাধান হয়ে থাকে। তাছাড়া
প্রাকৃতিক ওষুধ হিসেবে নিম পাতা ব্যবহার করা হয়ে থাকে। মুখে নিম পাতা ব্যবহার
করার মাধ্যমে আমাদের ত্বকের নানান ধরনের সমস্যা দূর করা হয়ে থাকে।
নিমপাতা ব্যবহারের মাধ্যমে আমাদের মুখের ব্রণ, মুখের এলার্জি, মুখের মেস্তা দাগ,
মুখের কালো দাগ, চোখের নিচের কালো দাগ, মুখের ক্ষত চিহ্ন, তাছাড়া চুলের খুশকি
দূর করার জন্য নিমপাতার বেশ উপকারিতা রয়েছে। তাছাড়া নিম পাতার রস খাওয়ার
মাধ্যমে আমাদের শরীরের নানান ধরনের সমস্যা সমাধান করা হয়ে থাকে।
ব্রণের জন্য নিম পাতার ব্যবহার
ব্রণের জন্য নিম পাতার বেশ উপকারিতা রয়েছে। নিম পাতা ব্যবহারের মাধ্যমে খুব
দ্রুত সময়ের মধ্যে আমাদের মুখে ব্রণ এবং মেস্তা দাগগুলো দূর করতে সাহায্য করে
থাকে। ব্রণের জন্য নিম পাতার ব্যবহার বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হলো। ব্রণের
সমস্যার জন্য নিম পাতার বেশ গুণ রয়েছে।
প্রথমে আপনাকে ১০ থেকে ১৫ টি নিমপাতা নিতে হবে, তারপর সেগুলোকে সুন্দরভাবে পিষে
পেস্ট করে আপনার মুখের যে যে স্থানে বরুন আছে সেখানে সুন্দরভাবে লাগিয়ে রাখতে
হবে। লাগানোর পরে ১০ থেকে ১৫ মিনিট অপেক্ষা করতে হবে। তারপরও পরিষ্কার পানি দিয়ে
সেটি ধুয়ে ফেলতে হবে। এভাবে ১০ থেকে ১৫ দিন ব্যবহার করলে আপনার মুখের ব্রণের
সমস্যা সমাধান করে থাকবে।
তাছাড়া আপনি নিম পাতার রস করে প্রতিদিন দিনে দুই থেকে একবার নিয়মিত খেলে আপনার
মুখের যেকোন সমস্যা সমাধান মিলে থাকে। নিম পাতা সাধারণত আমাদের মুখের ব্রণের
সমস্যা দূর করে না। বরঞ্চ আরো নানান ধরনের সমস্যা সমাধান করে থাকে। নিম পাতা তে
থাকা ভেষজ ঔষধ আমাদের শরীরের জন্য বেশ উপকারী।
চুলকানিতে নিম পাতার ব্যবহার
চুলকানির জন্য নিম পাতার বেশ উপকারী একটি উপাদান। মুখে নিম পাতার ব্যবহার করলে যে
রকম উপকার পাওয়া যায় ঠিক সেরকম চুলকানির জন্য নিম পাতার বেশ উপকারিতা রয়েছে।
তাছাড়াও নিম পাতাতে থাকা এন্টিঅক্সাইড ও এন্টিবায়োটিক আমাদের নানান ধরনের
সমস্যা সমাধান করতে সাহায্য করে থাকে। আসুন জেনে নেওয়া যাক চুলকানির জন্য নিম
পাতার ব্যবহার কি কি?
আরও পড়ুনঃপুদিনা পাতা খাওয়ার উপকারিতা
- চুলকানির জন্য কয়েকটি নিমপাতা এবং পানি শুদ্ধ করে নিতে হবে। এবং সে পানি দিয়ে গোসল করলে চুলকানির মত সমস্যার সমাধান করা যায়।
- নিম পাতার পেস্ট করে আপনার যে যে স্থানে চুলকানি দেখা দেয় সেই সেই স্থানে লাগালে আপনার চুলকানির সমস্যা সমাধান করা সম্ভব।
- নিমপাতা ও হলুদ একত্রে মিস করে আপনার চুলকানির জায়গায় লাগালে অতি তাড়াতাড়ি আপনার চুলকানির সমস্যা সমাধান করা যায়।
- তাছাড়া নিম পাতার তেল ব্যবহার করার মাধ্যমে চুলকানির মতো বড় ধরনের সমস্যা সমাধান করা সম্ভব।
নিম পাতার ক্ষতিকর দিক
নিম পাতা সাধারণত নিরাপদ একটি উপাদান। নিম পাতা যেরকম খাওয়ার মাধ্যমে আমাদের বেশ
উপকার আসে ঠিক তার ক্ষতিকর কিছু দিক রয়েছে। অতিরিক্ত মাত্রায় নিমপাতা ব্যবহার
বা খাওয়ার মাধ্যমে আমাদের পেট ব্যথা, মাথাব্যথা, ও বমি বমি ভাব দেখা দিতে পারে।
তাছাড়া নিমপাতা খাওয়ার মাধ্যমে আমাদের শরীরের নানান ধরনের সমস্যা সমাধান করার
সম্ভব হয়ে থাকে।
তাছাড়া যাদের কিডনির সমস্যা এবং লিভারের সমস্যা আছে তারা নিমপাতা রস না
খাওয়াটাই ভালো। কারো নীতি করে আরও বড় ধরনের দেখা দিতে পারে। তাছাড়া গর্ভবতী
মহিলাদের নিমপাতা রস এবং নিমপাতা ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া কোন মতে খাওয়া যাবে
না। কারণ এটি খেলে বড় ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে।
নিম পাতার রস খাওয়ার নিয়ম
আমরা সাধারণত মুখে নিম পাতার ব্যবহার করে নানান ধরনের সমস্যা সমাধান করে থাকে।
কিন্তু আমাদের জানা নেই নিমপাতার রস কিভাবে খেতে হয় বা খাওয়ার নিয়ম। প্রথমে
নিম পাতার কিছু কচি পাতা আপনাকে সংগ্রহ করতে হবে। সংগ্রহ করা নিম পাতাগুলো
পরিষ্কার পানি দিয়ে ধুয়ে একটি বাটিতে রাখতে হবে। তারপর সেগুলো ভালোভাবে পিষে বা
ব্লেন্ড করে নিতে হবে।
ব্লেন্ড করা বা পিসা নিমপাতা গুলো থেকে রস বের করে নিতে হবে। তারপর সে রসগুলো
আপনি প্রতিদিন সকালে কিংবা দুপুরের দুই থেকে তিন চামচ করে রেগুলার খেলে আপনার সকল
ধরনের সমস্যার সমাধান করা সম্ভব। সাধারণত নিম পাতা অনেককে তেতো হয়ে থাকে, চাইলে
আপনি নিম পাতার রসের সঙ্গে মধু মিশিয়ে খেতে পারেন। কিভাবে খাবার মাধ্যমে আপনার
নানান ধরনের সমস্যার সমাধান করা সম্ভব।
চর্মরোগে নিম পাতার ব্যবহার
মুখে নিম পাতার ব্যবহার করার মাধ্যমে আমাদের নানান ধরনের সমস্যার সমাধান করা হয়ে
থাকে। চর্ম রোগের জন্য নিম পাতার ব্যবহার নিয়ে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হলোঃ
- সাধারণত নিমপাতা পেস্ট করে চর্ম রোগের যে স্থানে আছে সেখানে লাগালে খুব দ্রুত সময় চর্মরোগ ভালো হয়ে যায়।
- তাছাড়া নিমপাতা পানি দিয়ে সিদ্ধ করে নিয়ে এসে পানি দিয়ে গোসল করলে খুব সহজেই চর্ম রোগের সমাধান মিলে।
- তাছাড়া নিমের তেল ব্যবহার করার মাধ্যমে চর্ম রোগের সমস্যা সমাধান করা সম্ভব।
- নিম পাতা ও হলুদ একত্রে মিশিয়ে পেস্ট করে চরমরের যে যে স্থানে আছে সেখানে ভালোভাবে লাগালে চর্মরক্ষক দ্রুত সময়ের মধ্যে সেরে যায়।
চুলে নিম পাতার ব্যবহার
চুলের নানা ধরনের সমস্যার সমাধান করার জন্য আমরা নিম পাতার ব্যবহার করে থাকি।
তাছাড়া আমরা পারিবারিক সামাজিক এবং নানান সময়ে নানান ভাবে নিম পাতার ব্যবহার
করে আসছি। আসুন জেনে নেওয়া যাক চুলের নিমপাতা ব্যবহারের নিয়ম গুলো কি কি সেগুলো
সম্পর্কে আলোচনা করা যাক।
- চুলে খুশকি জন্য নিম পাতার পেস্ট ব্যবহার করলে খুবই উপকার পাওয়া যায়।
- আপনার চুল পড়া রোধ করার জন্য নিম পাতার ব্যবহার খুবই উপকারী।
- আপনার চুলের ময়লা দূর করার জন্য নিম পাতার পেস্ট করে ব্যবহার করলে খুব দ্রুত সময় রেজাল্ট পাওয়া যায়।
- আপনার চুলের গোড়া ফাটাও ডগা ফাটা জন্য নিম পাতার ব্যবহার খুবই উপকারী।
- আপনার মাথার ত্বক ঠিক রাখার জন্য নিম পাতার ব্যবহার খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি উপাদান।
- সাধারণত নিম পাতার পেস্ট তৈরি করে 10 থেকে 15 মিনিট ব্যবহার করার মাধ্যমে আপনার মাথার ত্বক এবং কথার যত ধরনের সমস্যা আছে সবগুলো সমাধান করা সম্ভব।
তৈলাক্ত ত্বকে নিম পাতার ব্যবহার
নিম পাতায় থাকা এন্টি ইনফ্লামেন্টারি ও এন্টিবায়োটিক আমাদের ত্বকের তৈলাক্ত দূর
করার জন্য বেশি উপকারে একটি প্রদান। নিম পাতা ব্যবহারের মাধ্যমে আমাদের মুখের
কালো দাগ, মুখের ব্রণের দাগ, ও আমাদের চুল পড়া ও, চুলের নানান ধরনের সমস্যা
সমাধান করার জন্য বেশ কার্যকর একটি উপাদান। নিম পাতা ব্যবহার করার মাধ্যমে আমাদের
ত্বকের তৈলাক্ত দূর করে ও আমাদের ত্বক উজ্জ্বল করে থাকে।
তাছাড়া নিম পাতার রেগুলার ব্যবহার করার মাধ্যমে আমাদের মুখের তৈলাক্ত ও ত্বকের
শুষ্কতা দূর করতে সাহায্য করে থাকে। নিম পাতাতে থাকা এন্টি ইনফ্লামেন্টারি ও
এন্টিবায়োটিক আমাদের ত্বকের জন্য কাজ করে থাকে। নিম পাতা শুধু আমাদের ত্বকের কাজ
করে না আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে থাকে। নিমপাতা
প্রাচীন যুগ থেকে ব্যবহার করা আসছে। তাছাড়া মুখে নিম পাতার ব্যবহার করার মাধ্যমে
বেশি উপকার পাওয়া যায়।
দাউদে নিম পাতার ব্যবহার
সাধারণত আমাদের দেশে দাউদের সমস্যা একটু বড় ধরনের সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এটি
সাধারণ একটি ছোঁয়াচে রোগ হওয়ার কারণে আমাদের আশেপাশে কেউ ভিড়তে চায় না। তাই
নিমপাতা ব্যবহার করার মাধ্যমে খুব দ্রুত সময় দাউদের সমস্যা সমাধান করা হয়ে
থাকে। আসুন জেনে নেওয়া যাক দাউদের জন্য নিম পাতার ব্যবহার কি।
আরও পড়ুনঃবাংলাদেশে মাশরুম চাষের পদ্ধতি
- অল্প কিছু নিমপাতা পানি দিয়ে সিদ্ধ করে নিয়ে এসে পানি দিয়ে গোসল করার মাধ্যমে। দাউদের মতো সমস্যার সমাধান করা সম্ভব
- তাছাড়া নিম পাতা তেল ব্যবহার করার মাধ্যমে দাউদের সমস্যা সমাধান হয়।
- আপনার যে যে স্থানে দাউদ রয়েছে সেই সেই স্থানে নিমপাতা পিষে লাগালে দাউদের সমস্যা সমাধান করা যায়।
- আপনি যদি নিমপাতা সঙ্গে কিছুটা রসুন ব্যবহার করেন এবং সে বলে একত্রে পিষে দাউদের স্থানে লাগালে বেশ কয়েকদিনের মধ্যে দাউদ ভালো হয়ে যায়।
- রসুন এবং নিমপাতা একত্রে পিষে আপনি যদি রেগুলার ১০ থেকে ১৫ দিন ব্যবহার করতে পারেন তাহলে খুব দ্রুত সময় দাউদ ভালো হয়ে যায়।
- তাছাড়া আপনি যদি কাঁচা হলুদ এবং নিমের পাতা পিষে দাউদে লাগাতে পারেন তাহলে চিরদিনের জন্য আপনার দাউদ ভালো হয়ে যাবে। এটি সাধারণত ১৫ থেকে ২০ দিন ব্যবহার করতে হবে অন্তত।
উপসংহারঃ
পরিশেষে বলা যায় যে, মুখে নিম পাতার ব্যবহার করার মাধ্যমে বেশ কয়েকটি উপকার
পাওয়া যায়। তাছাড়া নিম পাতার ভেষজ ঔষধ হিসেবে কাজ করা হয়ে থাকে। নিমপাতা
ব্যবহার করার মাধ্যমে আমাদের শরীর এবং ত্বক দুটোরই নানান ধরনের সমস্যা সমাধান
করা সম্ভব। মুখে নিম পাতার ব্যবহার মাধ্যমে আমাদের মুখের ব্রণ এবং কালো দাগ দূর
করতে সাহায্য করে থাকে।
এছাড়াও আমাদের দাউদ, চর্ম রোগ, ও চুলকানির মত বড় ধরনের সমস্যা সমাধান করার
জন্য নিম পাতার বেশ উপকারিতা রয়েছে। নিম পাতা ব্যবহার করার মাধ্যমে আমাদের
শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে থাকে। তাছাড়া নিম পাতার
রস আমাদের শরীরের জন্য বেশ উপকারী।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url